খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ২০১৮’র রাতের ভোটের দায় স্বীকার করে সাবেক সিইসি নুরুল হুদার জবানবন্দি
  শেখ হাসিনাসহ তিনজনের পক্ষে অভিযোগ গঠনে সময় আবেদন, পরবর্তী শুনানি ৭ জুলাই

দায় স্বীকার করে জবানবন্দি সাবেক সিইসি নূরুল হুদার

গেজেট ডেস্ক

প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) চার দিনের রিমান্ড শেষে নুরুল হুদাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। এরপর নুরুল হুদা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি দেন। তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন নুরুল হুদা। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতের রেকর্ড করতে আবেদন করেন। বিচারকের খাস কামরায় দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

নুরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব অভিযোগ করে বলেন, আজকে নুরুল হুদার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হই। এরপর আদালতে গেলে জানতে পারি তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জামিন শুনানি আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নুরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত ২৭ জুন আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।

একই মামলায় গত ২৯ জুন তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়। গত ২২ জুন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি এ কে এম নুরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও মামলায় আসামি করা হয়।

পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।

মামলায় অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে গত তিনটি নির্বাচনে ‘গায়েবী মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্ত্বেও সংবিধান ও নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা তারা সবাই আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!